আপনিও কি ঘরে বসে অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার নানান উপায় গুলি খুঁজছেন? চিন্তা করতে হবেনা, কেননা বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের উপস্থিতির ফলে অনলাইনে স্থির বা নিয়মিত ভাবে টাকা উপার্জন করার জন্য আমাদের প্রত্যেকের কাছেই রয়েছে নানান সুযোগ। সত্যি বলতে আজ আমরা প্রত্যকেই কিছুটা হলেও অতিরিক্ত আয়ের নানান উপায় গুলো খুঁজে থাকি। তবে হতে পারে আপনি একজন স্টুডেন্ট, মহিলা বা চাকরিপেশা একজন লোক, ডেইলি ৫০০ টাকা ইনকাম করাটা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। এক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক ডাইরেক্শনে কাজ করার পাশাপাশি সঠিক নিয়ম, কৌশল, এবং প্লাটফর্ম গুলো কাজে লাগাতে হবে।

বর্তমানের ডিজিটাল যুগে অনলাইন কিংবা অফলাইন, দুভাবেই পার্ট-টাইম এক্সট্রা টাকা উপার্জন করা সম্ভব। উদাহরণ স্বরূপ, যদি আপনি একজন কলেজে পড়াশোনা করা ছাত্র, এক্ষেত্রে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে বা অফলাইনে টিউশন করিয়ে, দুভাবেই টাকা ইনকাম করতে পারেন। এবার যদি আপনি একজন মহিলা, এক্ষেত্রে আপনি চাইলে ঘর থেকে কুকিং বা আর্ট এন্ড ক্র্যাফট এর মতো ব্যবসা করে বা অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবহা শুরু করেও নিয়মিত রোজগার করতে পারবেন। ঠিক সেভাবেই চাকুরিজীবী ব্যক্তিদের জন্য কনটেন্ট রাইটিং, ব্লগিং, YouTube, Freelancing, ইত্যাদির মতো একাধিক বিকল্প গুলো উপলব্ধ রয়েছে।
ডেইলি ৫০০ টাকা ইনকাম করার জন্য কিসের প্রয়োজন?
যদি আপনি অনলাইনে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা নিয়মিত ইনকাম করার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন, এক্ষেত্রে আপনি যেই উপায় বা মাধ্যমগুলি ব্যবহার করছেননা কেন, আপনার প্রয়োজন হবে খানিকটা প্রচেষ্টার এবং একটি নির্ভরযোগ্য কৌশল এর।
অনলাইনে টাকা ইনকাম করার নানান ওয়েবসাইট গুলো রয়েছে, যেগুলোর দ্বারা ইনকাম করার জন্য কোনো ধরণের বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয়না। এক্ষেত্রে, কিছু ছোটো-খাটো কাজ (micro jobs) গুলো করার মাধ্যমে অনেক সামান্য পরিমানের ইনকাম সম্ভব।যদি আপনি প্রতিদিন কমেও ৫০০ টাকা আয় করে নিতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে আপনার মধ্যে কিছু বিশেষ জ্ঞান, কৌশল বা অভিজ্ঞতা গুলো অবশই থাকতে হবে। এক্ষত্রে কি কি কৌশল জানা থাকতে হবে, সেটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করছে কাজের ধরণের ওপর।
জানিয়ে রাখছি, অনলাইন কাজ গুলো শুরু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে, বেসিক কম্পিউটার জ্ঞান, কম্পিউটার টাইপিং, ইন্টারনেটের ব্যবহার, ধর্য্য এবং সময় এর।এছাড়া, যেই অনলাইন মাধ্যম গুলি নিয়ে কাজ করবেন সেই মাধ্যম গুলির সাথে জড়িত নানান জরুরি দক্ষতা (skills) গুলিও থাকাও দরকার। নিচে সেই দক্ষতা গুলির বিষয়ে অধিক ভালো করে বুঝতে পারবেন।
অবশই পড়ুন: ফ্রিতে ডলার ইনকাম করার জনপ্রিয় ৫টি উপায়
দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করার অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো:
অনলাইনে কাজ করে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা ইনকামের এমন ডাইরেক্ট কোনো প্লাটফর্ম নেই যেখানে গিয়ে কাজ করে দিনে অন্তত ৫০০ টাকা ইনকাম করা যাবে। তবে হ্যা, এমন নানান অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো রয়েছে যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যাবে। যেমন ধরুন, Google-এর blogger.com-এর সাহায্যে অনেকেই নিজের একটি blog site তৈরি করার মাধ্যমে নিয়মিত ইনকাম করছেন।
আবার, Shutterstock, 500px, Getty Images ইত্যাদির মতো নানান অনলাইনে ছবি বিক্রি করে ইনকাম করার প্লাটফর্ম গুলো রয়েছে, যেগুলোকে কাজে লাগিয়েও অনেকেই প্রতিদিন ইনকাম করছেন। কেও হয়তো, Fiverr, Upwork, Guru.com, Freelancer.com ইত্যাদির মতো online freelancing platform গুলিকে কাজে লাগিয়ে দিনে অন্তত ৫০০ টাকা ইনকাম করার সুযোগ পাচ্ছেন।
তাই, দিনে ৫০০ টাকা উপার্জন করার ক্ষেত্রে এমন প্রচুর অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো আছে, যেগুলোকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে, নিয়মিত ইনকামের সুযোগ অবশই রয়েছে।
অনলাইনে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা উপার্জনের উপায় গুলো কি?
ইনকামের উপায় গুলো: | কিসের প্রয়োজন: |
---|---|
১. Freelancing | কাজের বিশেষ দক্ষতা বা কৌশল জানা থাকতে হবে। |
২. Online course selling | অনলাইন নিজের দ্বারা তৈরি কোর্স বিক্রি করতে হবে। |
৩. Affiliate marketing | অনলাইন মার্কেটিং এর কার্যকর কৌশল জানা থাকতে হবে। |
৪. Stock Photography | সুন্দর সুন্দর ছবি তোলার কৌশল জানতে হবে। |
৫. Content writing work | সঠিক ভাবে আর্টিকেল লিখার কৌশল জানতে হবে। |
৬. Content creation work | অনলাইনে চাহিদা থাকা কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। |
৭. Social media page | পেজে প্রচুর ফলোয়ার্স থাকতে হবে। |
৮. Refer & earn programs | রেফার করে ইনকাম করার একটি ভালো প্রোগ্রাম লাগবে। |
৯. Online Tutor | অনলাইনে পড়াশোনা করিয়ে ইনকাম। |
১০. Paid Survey Website | সার্ভে পূরণ করে ইনকাম। |
১১. Blogging | ব্লগ আর্টিকেল লিখে ইনকাম। |
১২. Create Apps | App-তৈরি করে ইনকাম। |
১৩. YouTube Creator | ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হয়। |
চলুন, এখন নিচে আমরা টাকা ইনকাম করার এই সেরা উপায় গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জেনেনেই।
১. Freelancing
ফ্রিল্যান্সিং এর বিষয়ে আমি আগেও অনেকবার অনলাইন ইনকাম রিলেটেড আমার নানান আর্টিকেল গুলিতে বলেছি। একজন freelancer হিসেবে যদি আপনি নিজের একটি শক্তিশালী ক্লায়েন্ট বেস তৈরি করে নিতে সক্ষম হন, তাহলে দিনে কমেও ৫০০ টাকা আয় করার বিষয়টি আপনার জন্যে অনেক সহজ হয়ে দাঁড়াবে।
ফ্রিল্যান্সিং তাদের জন্যে প্রকৃতপক্ষে প্রতিদিন অনলাইনে অর্থ উপার্জনের একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে যাদের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং প্রেরণা।
কেবল ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই আপনি যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে আপনার নিজস্ব সময়সূচী সেট করার মাধ্যমে কাজ করার স্বাধীনতা প্রদান করে থাকে। এছাড়া, আপনি নিজের পছন্দ, দক্ষতা এবং ইন্টারেস্ট হিসেবে কাজ/প্রজেক্ট গুলো সিলেক্ট করতে পারবেন।
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার জন্যে আপনারা নানান অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এই freelance marketplace গুলিতে আপনারা writing, graphic design, web development, virtual assistance, marketing ইত্যাদি নানান ধরণের শিল্প এবং দক্ষতার সাথে জড়িত কাজ গুলো পাবেন।
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে, আপনার কাছে একাধিক projects গুলো গ্রহণ করে একসাথে একাধিক ক্লায়েন্ট দের জন্যে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এতে, যত অধিক প্রজেক্ট গুলো আপনার দ্বারা সম্পূর্ণ করা হবে, ততটাই অধিক ইনকাম আপনি করতে পারবেন।
Freelancing শুরু করার জন্যে কোনো ধরণের বিশেষ ইনভেস্টমেন্ট করতে হবেনা। আপনার প্রয়োজন হবে একটি laptop/computer, internet connection এবং কাজের জন্যে প্রয়োজনীয় software এবং tools গুলো। ফ্রিল্যান্সারদের তাদের দক্ষতা এবং কাজের সাথে জড়িত কৌশল গুলোর ভিত্তিতে টাকা অফার করা হয়। তাই, যদি আপনার এমন কিছু skills রয়েছে যেগুলির চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি, তাহলে আপনি প্রতিটি কাজের জন্যে অধিক টাকা দাবি করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত কিছু প্রশ্ন:
- কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো এবং শুরু করবো?
- নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে সহজ কাজ কোনটি?
- ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন?
- ফ্রিল্যান্সিং কাজ কত প্রকারের হতে পারে? সেগুলো কি কি?
- Fiverr কি ? কিভাবে ফাইভার থেকে টাকা আয় করবেন
২. Online course selling
নিজের একটি কোর্স তৈরি করে সেটিকে অনলাইনে বিভিন্ন উপায়ে বিক্রি করার প্রক্রিয়াটি ইন্টারনেট থেকে দৈনিক ইনকামের একটি অনেক শক্তিশালী উপায় বলা যেতেই পারে। বিশেষ করে, যদি আপনার কাছে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান বা দক্ষতা থেকে থাকে, তাহলে এই কাজে সফলতা পাওয়ার সুযোগ অনেকটাই বেশি।
একবার যখন আপনি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনার video course তৈরি করে অনলাইনে পাবলিশ করে দিবেন, এটি অনলাইন প্যাসিভ ইনকামের একটি অনেক শক্তিশালী ও কার্যকর উৎসও হয়ে উঠতে পারে। মানে, একবার নিজের সময় এবং পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে ভিডিও কোর্স তৈরি করার পর, আপনি সেই একই কোর্স প্রতিবার নতুন নতুন ছাত্রদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
এছাড়া, প্রতিটি নতুন বিক্রয়ের জন্য অতিরিক্ত সময় বা নতুন করে সংস্থান (resources) গুলোর প্রয়োজন হবেনা। অনেকেই রয়েছেন যারা কোর্স তৈরির জন্যে এমন টপিক গুলো সিলেক্ট করেন যেগুলোর মূল বিষয় না তথ্য সব সময় একই থেকে যায়। যেমন ধরুন, YouTube income course, blogging course, computer course, ইত্যাদি। একবার কোর্স তৈরি করার পর একটানা ৩-৫ বছর পর্যন্ত সেই একই কোর্সটি নতুন নতুন ইউজারদের বিক্রি করে নিয়মিত ইনকামের সুযোগ পাওয়া যায়।
মনে রাখবেন, আপনাকে অনলাইনে চাহিদা থাকা এমন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ভিডিও কোর্স তৈরি করতে হবে যেই বিষয়ে শেখার রুচি প্রচুর ছাত্রদের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া, সঠিক মার্কেটিং কৌশল এবং প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন কোর্সটিকে আপনি অনেক সহজেই বিপুল শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।
অবশই পড়ুন: ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সেরা ৭ টি উপায়
৩. Affiliate marketing
এফিলিয়েট মার্কেটিং, একটি অনেক দারুন ও কার্যকর উপায় যদি আপনি অনলাইনে কাজ করে দৈনিক কমেও ৫০০ টাকা ইনকাম করার কথা ভাবছেন। এক্ষেত্রে আপনি, একটি বা একাধিক অনলাইন কোম্পানি গুলির product বা services গুলিকে প্রচার করার মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করার সুযোগ পাবেন।
একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে আপনাকে নিজের কোনো পণ্য বা পরিষেবা তৈরি করতে হবেনা। পরিবর্তে, আপনাকে অন্যদের দ্বারা তৈরি করা পণ্য বা পরিষেবা গুলিকে প্রচার করতে হয় এবং প্রচারের বিনিময়ে আপনাকে কমিশন ইনকামের সুযোগ দেওয়া হয়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনাকে তেমন কোনো ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ করতে হয়না। তাই, একেবারে সামান্য বিনিয়োগ করেই শুরু করতে পারবেন এই কাজ। ইন্টারনেটে হাজার হাজার পণ্য এবং পরিষেবা গুলোর সাথে জড়িত নানান affiliate program গুলো আপনারা পাবেন। তাই, নিজের পছন্দের একটি affiliate program-এর সাথে যুক্ত হয়ে তাদের পণ্য এবং পরিষেবা গুলি প্রচার করে নিজের জন্যে নিয়মিত ইনকামের সুযোগ তৈরি করুন।
৪. Stock Photography
আপনি কি জানেন, অনলাইনে ছবি বিক্রি করেও দৈনিক ৫০০ টাকা বা তার থেকেও অধিক ইনকাম করা যাবে? হ্যা, স্টক ফোটোগ্রাফিও অনলাইনে দৈনিক ভিত্তিতে অর্থ উপার্জনের একটি অনেক কার্যকর উপায়। ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করার উপায়টিতেও আপনাকে কোনো টাকা বিনিয়োগ করতে হয়না।
তবে, এই উপায়টি মূলত সেই ব্যক্তি বা ফটোগ্রাফার দের জন্যে উত্তম যাদের কাছে প্রচুর হাই কোয়ালিটি ছবির সংগ্রহ রয়েছে। বা, যদি আপনি high quality images গুলো তুলতে জানেন, তাহলে আপনার জন্যেও দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম করার এই উপায়টি সেরা প্রমাণিত হতে পারে। এখানে, আপনাকে নিজের হাই কোয়ালিটি ছবি গুলোকে stock photography websites গুলিতে upload করতে হয়। আপনার আপলোড করা ছবি গুলো এবার অন্যান্য ইউসার দ্বারা কিনে নেওয়ার জন্যে উপলব্ধ করানো হয়।
এতে, আপনার জন্যে তৈরি হয়, প্যাসিভ আয়ের একটি সম্ভাব্য উৎসের। কারণ, প্রতিবার যখনি কেও আপনার একটি বা একাধিক ছবি গুলো কেনেন বা লাইসেন্স করে থাকেন, তখন আপনাকে সেই বিক্রির জন্যে কিছু টাকা কমিশন হিসেবে দিয়ে দেওয়া হয়। আপনি চাইলে একাধিক stock image website গুলোতে account তৈরি করার মাধ্যমে একই ছবি প্রতিটি ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারবেন। এতে, একই ছবি একাধিক ওয়েবসাইট গুলোর দ্বারা বিক্রি করিয়ে অনলাইনে প্রচুর টাকা ইনকাম করা যাবে।
তাহলে দেরি না করে সেরা স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে নিজের একটি একাউন্ট তৈরি করুন এবং নিজের তোলা ছবি গুলো বিক্রি করে ইনকাম করুন।
অবশই পড়ুন: ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার সেরা উপায় গুলো
৫. Content writing work
যদি আপনি ঘরে বসে অনলাইনে কাজ করে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বা তার থেকেও অধিক ইনকাম করতে চাইছেন, তাহলে কনটেন্ট লেখার কাজ গুলো করতে পারেন। কেননা, অনেকের জন্যেই এই কনটেন্ট লেখার কাজটি প্রতিদিনের ভিত্তিতে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের একটি চমৎকার উপায় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
বিশেষ করে যদি আপনার মধ্যে উচ্চ মানের আর্টিকেল লেখার দক্ষতা এবং আকর্ষক এবং তথ্যপূর্ণ কনটেন্ট তৈরি করার কৌশল গুলো থেকে থাকে, তাহলে এই কাজ করে প্রতিদিন ভালো মানের টাকা ইনকাম করার সুযোগ পাবেন।
বর্তমান সময়ে, একটি ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল মার্কেটিং, ইত্যাদি নানান কারণে হাই কোয়ালিটির এবং আকর্ষক কনটেন্ট গুলির প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর তাই, একজন দক্ষ কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনিও এই উচ্চ চাহিদা থাকা ইন্ডাস্ট্রিতে নেমে পরতে পারেন। আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে অআপনি নানান বিষয় গুলি সিলেক্ট করতে পারেন, যেমন ধরুন – marketing, technology, health, finance, travel, lifestyle ইত্যাদি।
আপনি নিজের পছন্দমতো যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় বসে নিজের কাজ করতে পারবেন। এছাড়া, একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনার কাছে নিজের একটি blog বা website তৈরি করে, affiliate marketing এবং ads-এর দ্বারা ইনকাম করারও বিকল্প থাকছে।
৬. Content creation work
আপনার মধ্যে যদি আকর্ষক এবং উচ্চ মানের কনটেন্ট গুলো তৈরি করার প্রতিভা আছে, তাহলে আপনি YouTube, podcast এবং blogging-এর মতো সেরা অনলাইন ইনকামের উপায় গুলো ব্যবহার করেও দৈনিক রোজগারের সুযোগ পাবেন।
ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন এবং ব্লগ কি ও কিভাবে টাকা আয় করবেন, এই দুটো বিষয়েই আমি আগেই আপনাদের সম্পূর্ণ ভালো ভাবে বুঝিয়ে বলেছি। YouTube-এর ক্ষেত্রে আপনাকে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে হয়। এবং, Blogging-এর ক্ষেত্রে আপনাকে নিজের একটি blog site তৈরি করে সেখানে text এবং image সহ আর্টিকেল গুলো লিখে পাবলিশ করতে হয়।
দুটো ক্ষেত্রেই, যখন আপনার প্রচুর ভিউস (views) হতে শুরু করবে এবং ফলোয়ার্স বাড়বে, তখন আপনি গুগল অ্যাডসেন্স এর ব্যবহার করে নিজের blog বা YouTube চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে প্রতিদিন ডলারে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
অবশই পড়ুন: ৭টি মাধ্যমে গুগল থেকে টাকা ইনকাম করুন
৭. Social media page
যদি আপনার এমন কোনো social media page বা profile আছে যেখানে প্রচুর follower সংখ্যা আছে, তাহলে সেই পেজ থেকেও বিভিন্ন মাধ্যমে ইনকামের সুযোগ আপনি পাবেন। যেমন ধরুন, বিজ্ঞাপন দেখিয়ে, এফিলিয়েট মার্কেটিং করে, পণ্যের বা ব্র্যান্ড এর প্রচার করা ইত্যাদি নানান মাধ্যমে একটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মেয়ে পেজ থেকে অনলাইনে ইনকাম করা যাবে।
দেখুন,সোশ্যাল মিডিয়া পেজ বা প্রোফাইল গুলোর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করাটা সম্ভব, তবে এক্ষেত্রে সময় এবং প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে Instagram, YouTube, TikTok ইত্যাদির মতো social media platform গুলিতে নিজের একটি following base তৈরি করতে হবে।
একবার আপনার পেজ/প্রোফাইলে একটি শক্তিশালী ফলোয়ার বেস তৈরি হয়ে গেলে, এবার নানান ব্রান্ডের সাথে যোগাযোগ করে তাদের পণ্য বা পরিষেবা গুলো প্রচার করার মাধ্যমে ইনকামের দারুন সুযোগ পেতে পারবেন। ব্র্যান্ড গুলো, তাদের পণ্যের বা পরিষেবার সাথে জড়িত sponsored posts বা video গুলো পোস্ট করার জন্যে আপনাকে টাকা দিয়ে থাকেন।
দৈনিক ৫০০ টাকা ইনকাম করার জন্য, আপনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজের মধ্যে প্রতিদিন আলাদা আলাদা ব্র্যান্ড, ব্লগ, ওয়েবসাইট, চ্যানেল ইত্যাদির স্পন্সরড পোস্ট গুলো পাবলিশ করতে পারবেন। তবে, এমন নানান ব্র্যান্ড গুলো রয়েছে যারা একটি sponsored post-এর জন্যে হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে।
রিলেটেড: টাকা আয় করার রিয়েল বিদেশি ইনকাম সাইট গুলো
৮. Refer & earn programs
আপনি কি রেফার করে টাকা ইনকাম করার বিষয়টি জানেন? ইন্টারনেটে এমন নানান apps এবং website গুলো রয়েছে যেগুলিকে রেফার করলে প্রতিটি রেফারেলের জন্যে আপনাকে টাকা দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে এমন কিছু নামী কোম্পানি বা প্ল্যাটফর্ম গুলির সাথে কাজ করা দরকার যারা সত্যি এই refer & earn programs গুলোর সুবিধা দিয়ে থাকে।
App বা website গুলো রেফার করার জন্যে আপনাকে একটি বিশেষ referral link দিয়ে দেওয়া হয়। এবার যখনি আপনার রেফারেল লিংক ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি সেই app-টি download করবেন বা ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি করবেন, আপনাকে কিছু টাকা রেফারাল ইনকাম হিসেবে দিয়ে দেওয়া হবে।
আপনি আপনার রেফারেল লিংক/কোডটি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল/পেজ, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি সবখানেই শেয়ার করতে পারবেন। এবার, এই মাধ্যমটি কাজে লাগিয়ে দিনে কমেও ৫০০ টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে আপনার কাছে প্রচুর follower base থাকতেই হবে। এই মাধ্যমে প্রতিদিন টাকা আয় করার ক্ষেত্রে একটি অধিক ফলোয়ার্স সহ একটি blog, YouTube channel বা social media page থাকতে হবে।
৯. Online Tutor:
অনলাইনে পড়াশোনা করিয়ে আপনি নিজের খালি সময়টিকে কাজে লাগিয়েও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। অনলাইনে টিউশনি করিয়ে আরামে প্রতিমাসে কমেও ১৫ থেকে ২০ হাজার আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ডেইলির ইনকাম হিসেব করলে, মোটামোটি ৫০০ থেকে ৬০০ ডেইলি ইনকাম করা যাচ্ছে।
অনলাইনে টিউশনি করিয়ে ইনকাম করার উপায় অনেক আছে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে Udemy, Unacademy, বা Skillshare-এর মতো প্লাটফর্ম গুলোতে নিজের ভিডিও কোর্স বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি লাইভ ক্লাস করানোর কথা ভাবছেন, সেক্ষেত্রে zoom এবং Google Meet এর মতো tools গুলোকে কাজে লাগাতে পারবেন।
এগুলোর বাইরেও, UrbanPro এবং Superprof-এর মতো ওয়েবসাইটে নিজেকে একজন শিক্ষক হিসেবে রেজিস্টার করিয়ে ছাত্রদের সরাসরি অনলাইন টিউশন ক্লাস করাতে পারেন।
YouTube-এর মতো প্লাটফর্ম গুলোকে কাজে লাগিয়েও নানান শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করে বা সরাসরি লাইভ স্ট্রিমিং এর দ্বারা আপনি অনলাইন ক্লাস করাতে পারবেন। YouTube-এর ক্ষেত্রে, আপলোড করা নিজের শিক্ষামূলক ভিডিও গুলোতে Google AdSense-দ্বারা দেখানো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
তাই, যদি আপনি কোনো একটি বা একাধিক সাবজেক্টে ভালো জ্ঞান রাখেন, তাহলে অনলাইনে নানান উপায়ে টিউশনি করিয়ে বা শিক্ষামূলক ভিডিও বানিয়ে আপনি রেগুলার অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
১০. Paid Survey Website:
প্রতিদিন মোটামোটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করার জন্য আপনি কাজে লাগাতে পারেন নানান পেইড সার্ভে ওয়েবসাইট গুলো। Online paid survey website গুলোতে, নানান কোম্পানি, ব্র্যান্ড, পণ্য এবং পরিষেবা গুলোর বিষয়ে আমাদের প্রশ্ন করা হয়। পণ্য এবং পরিষেগুলি নিয়ে আমাদের কি মতামত, সেটা জানাটাই হলো এই সার্ভে গুলোর মূল উদ্দেশ্য।
সার্ভে পূরণ করে ইনকাম করতে আপনাকে সবচেয়ে আগে, Swagbucks, Toluna, ySense, YouGov, ইত্যাদি এই ধরণের ওয়েবসাইট গুলোতে নিজের একটি ফ্রি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। মনে রাখবেন, শুধু একাউন্ট তৈরি করলেই কাজ হবেনা, আপনাকে নিজের প্রোফাইলটি সম্পূর্ণভাবে আপডেট রাখতে হবে। প্রোফাইল আপডেট থাকলেই আপনার প্রোফাইলের সাথে রিলেটেড সার্ভে গুলো নিয়মিত আপনাকে সম্পূর্ণ করতে দেওয়া হবে।
বেশিরভাগ সার্ভে ওয়েবসাইট গুলোতেই, প্রতিটি পেইড সার্ভে সম্পূর্ণ করার বিপরীতে আপনাকে $0.20 থেকে $5 বা এর থেকেও অধিক অফার করা হয়। তবে প্রতি সার্ভেতে আপনি কত টাকা পাবেন সেটা মূলত সার্ভের ধরণ, আপনার প্রোফাইল লোকেশন এবং সার্ভে সম্পূর্ণ করতে কত সময় লাগবে, এই বিষয় গুলোর উপর নির্ভর করে।
Survey website গুলোর থেকে অধিক ইনকাম করতে আপনি এদের রেফারাল প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারেন এবং ওয়েবসাইটে উপলব্ধ অন্যান্য টাস্ক গুলো সম্পূর্ণ করতে পারেন।
১১. Blogging:
Blogging করে আমি নিজে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করে নিতে পারছি। Blogging হলো অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জনের একটি প্রমাণিত, সর্বাধিক ব্যবহূত এবং লাভজনক একটি উপায়। যদি আপনিও ব্লগিং করে নিয়মিত অর্থ উপার্জন করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে বলে দেওয়া এই ধাপ গুলো অনুসরণ করুন।
Blogging করে অর্থ উপার্জন করার জন্য সবচেয়ে আগেই আপনাকে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করতে হবে এবং সেখানে নিয়মিত হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট লিখে পাবলিশ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি blogger বা WordPress-এর মতো প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এখন আপনি হয়তো ভাবছেন ব্লগ সাইট বানিয়ে ইনকাম কিভাবে হবে? তাই তো?
জানিয়ে রাখছি, আপনি Google AdSense-এর মতো প্লাটফর্ম গুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজের ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে করতে পারবেন ইনকাম। এছাড়া, ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার ক্ষেত্রে, এফিলিয়েট মার্কেটিং, পেইড প্রমোশন, পেইড গেস্ট পোস্ট, ইত্যাদির মতো কৌশল গুলোকেও কাজে লাগাতে পারেন।
১২. Create Apps:
আপনি কি জানেন, আপনি চাইলে নিজের একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে ডেইলি নিজের অ্যাপ থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন? হ্যা, এটা অবশই সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে Android Studio-এর মতো টুলস গুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজের একটি android app তৈরি করে নিতে পারবেন। এছাড়া, অনলাইনে এমন নানান প্লাটফর্ম এবং টুলস উপলব্ধ রয়েছে যেখানে কোনো ধরণের কোডিং না করেই একটি app তৈরি করা সম্ভব।
নিজের একটি android app তৈরি হয়ে গেলে এবার app-টি Google Play Store-এ জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে সামান্য কিছু টাকা ওয়ান টাইম ফী হিসেবে দিতে হতে পারে। সে যাই হোক, এবার আসছে আসল প্রশ্ন, তৈরি করা অ্যাপ থেকে ইনকাম কিভাবে করবেন? এর উত্তরও আমি নিচে দিয়েছি।
App তৈরি করে ইনকাম করার ক্ষেত্রে আপনারা মূলত ৩টি উপায়কে কাজে লাগাতে পারেন। In-app purchase, Subscription, এবং অ্যাপে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে। নিজের মোবাইল অ্যাপে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করতে Google AdMob নামের প্লাটফর্মটি সর্বাধিক পরিমানে ব্যবহার করা হয়।
FAQ: How To Earn 500 Daily Online?
ডেইলি কমেও ৫০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে, Blogging, affiliate marketing, content writing, freelancing, এই ধরণের কাজ গুলো করতে পারেন।
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার কাছে থাকতে হবে একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট রিলেটেড সাধারণ জ্ঞান। এছাড়া প্রয়োজন হবে ক্রিয়েটিভিটির এবং একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেটিকে কাজে লাগিয়ে নিয়মিত টাকা আয় করা যাবে।
দেখুন, ওপরে আমি অনলাইনে নিয়মিত টাকা আয় করার যেই উপায় গুলোর বিষয়ে বলেছি, সেগুলো ব্যবহার করে আগের থেকেই বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ লোকেরা নিয়মিত ইনকাম করছেন। তাই, এখানে আমি এমন কোনো নতুন উপায়ের বিষয়ে বলিনি। ওপরে বলা প্রতিটি উপায় প্রমাণিত এবং অনেকেই এগুলোর দ্বারা নিয়মিত ইনকাম করছেন।
যদি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কমেও ১৫ থেকে ২০ হাজার সাবস্ক্রাইবার আছে এবং আপনি নিয়মিত নিজের চ্যানেলে ভিডিও পাবলিশ করেন, সেক্ষেত্রে প্রতিমাসে ২০০ থেকে ৫০০ ডলার আরামে আয় করা যেতে পারে। সেভাবেই ইউটিউব থেকে হওয়া ডেইলি ইনকামের পরিমান মোটামোটি ৭ থেকে ১৫ ডলারের মধ্যে থাকবে।
আমাদের শেষ কথা,,
ইন্টারনেট থেকে প্রতিদিন টাকা ইনকাম করার এই প্রতিটি উপায় ব্যবহার করে আপনি কেবল তখন অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবেন, যখন আপনি উপায়গুলিকে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করার মাধ্যমে করতে পারছেন।
মনে রাখবেন, যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই আপনাকে প্রয়োজনীয় সময় টুকু অবশই দিতে হবে। পার্ট-টাইম হিসেবে করা যাবে যদিও, ডেইলি ৫০০ টাকা উপার্জন করার এই উপায় শুরু করে নিয়মিত ইনকাম করার জন্যে পরিশ্রমেরও প্রয়োজন অবশই আছে।
শেষে, অনলাইনে টাকা ইনকাম করার এই উপায় গুলো শুরু করার আগে, ইন্টারনেটে গিয়ে উপায় গুলির বিষয়ে বিস্তারিত জেনেনিতে ভুলবেননা। নানান রিভিউ, পেমেন্ট এর প্রুফ ইত্যাদি দেখার মাধ্যমে আপনি ভালো করে বুঝে নিতে পারবেন যে, কোন মাধ্যমটির দ্বারা সত্যি সহজে ইনকাম করতে পারবেন।
অবশই পড়ুন: